ব্লুটুথ সম্পর্কিত সকল তথ্য!

একটা সময় ছিলো যখন অ্যান্ড্রয়েড ফোন ছিলোনা তখন মানুষ এক মোবাইল থেকে আরেক মোবাইলে ছবি অডিও ভিডিও বা যেকোনো ফাইল আদান প্রদান করার জন্য ব্লুটুথ ব্যবহার করতো, কিন্তু পরবর্তীতে যখন স্মার্টফোন আসলো তখন এক মোবাইল থেকে আরেক মোবাইলে ফাইল আদান-প্রদান করার জন্য মানুষ Any share বা SHAREit অ্যাপস ব্যবহার করা শুরু করেন, কিন্তু এখন বর্তমানে ২০২১ সালে খুব কম মানুষই আছেন যারা এক মোবাইল থেকে আরেক মোবাইলে ফাইল আদান-প্রদান করেন, কারন ফাইল ট্রান্সফার হতে যত সময় লাগে তার থেকে কম সময়ে খুব সহজে ইন্টারনেট থেকে ডাউনলোড করা যায় আর এখন তো ঘরে ঘরে ইন্টারনেট (wifi),

মাত্র ১০ বছরে প্রযুক্তির এতো কিছু আপডেট আমার ভাবনার বাহিরে, হয়তো আরো অনেক কিছুই আপডেট আমরা পাবো, আরো উন্নত হবে তথ্য প্রযুক্তির সকল বিষয়বস্তু তবে প্রযুক্তি যতই আপডেট হোক না কেনো এক মোবাইল থেকে আরেক মোবাইলে ফাইল আদান-প্রদান করার কথা ভাবলে যে বিষয়টি সবার প্রথমে আমার মাথায় আসে সেটি হচ্ছে Bluetooth



ব্লুটুথ কি?

শুদ্ধ বাংলায় ব্লুটুথ শব্দের অর্থ হচ্ছে "নীল দাত" কিন্তু প্রযুক্তির ভাষায় ব্লুটুথ হচ্ছে এক ধরণের তারহীন প্রোটোকল, যার মাধ্যমে এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ছবি অডিও ভিডিও বা যেকোনো ফাইল আদান-প্রদান করা যায়, ১৯৯৪ সালে সুইডিশ কোম্পানি এরিক্সন সর্বপ্রথম ব্লুটুথ টেকনোলজি উদ্ভাবন করেন এবং এর নামকরণ করা হয় ৯০০ অব্দের ডেনমার্কের রাজা হেরাল্ড ব্লুটুথ এর নামে। ব্লুটুথ আবিষ্কার করার চার বছর পর অর্থাৎ ১৯৯৮ সালে কিছু গ্রুপ অফ কোম্পানি একসাথে ব্লুটুথ টেকনোলজি নিয়ে কাজ করতে সম্মত হয়, পরবর্তীতে এই কোম্পানিগুলোই ব্লুটুথ টেকনোলজি নিয়ে কাজ করার জন্য Bluetooth Special Interest Group (SIG) নামে একটি সংঘটন গড়ে তোলেন।


ব্লুটুথ কিভাবে কাজ করে?

ব্লুটুথ সাধারণত ১০ মিটার রেঞ্জের মাঝে কাজ করে তবে এনার্জি লেভেল বাড়িয়ে এর রেঞ্জ ১০০ মিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি করা যায়।ব্লুটুথের প্রথম সংস্করন এর সর্বোচ্চ ডাটা স্পীড ছিল ৩ এমবিপিএস যেটি ব্যবহার হতো সাধারণ বাটন ফোনে, আর বর্তমানের অ্যান্ডুয়েড স্মার্টফোন গুলোতে ব্যবহৃত ব্লুটুথ এর তৃতীয় সংস্করন এর সর্বোচ্চ ডাটা স্পীড হচ্ছে ২৪ এমবিপিএস। ব্লুটুথের সেন্ডিং সিগন্যাল পাওয়ার ১ মিলি-ওয়াট, এবং ব্লুটুথের ট্রান্সমিটার প্রতি সেকেন্ডে ১৬০০ বার ফ্রিকোয়েন্সি পরিবর্তন করে।


মোবাইলে ব্লুটুথ অন থাকলে কি কোনো সমস্যা হয়?

সাধারনত মোবাইলে ব্লুটুথ চালু থাকলর কোনো সমস্যা হয় না তবে ব্লুটুথ টেকনোলজিকে সর্বোচ্চ বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী করে ডিজাইন করা হয়েছে। বহুল ব্যবহৃত ব্লুটুথ ক্লাস ২ রেডিয়াস ২.৫ মিলি-ওয়াট বিদ্যুৎ ব্যাবহার করে, তাই বেশিক্ষণ ব্লুটুথ চালু রাখলে দ্রুত চার্জ শেষ হয়ে যায়। সেজন্য কাজ শেষে ব্লুটুথ অফ করে দেয়াই ভালো।


ব্লুটুথের অন্যান্য ব্যবহার 

ফোনের সাথে হ্যান্ডস ফ্রি হেডসেটের সংযোগ ঘটিয়ে সাউন্ড বা ভয়েস ডেটা স্থানান্তর করা হয়।

ফোন থেকে কম্পিউটারে ফাইল স্থানান্তরে এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা

কম্পিউটারের সাথে অন্যান্য ডিভাইসের সংযোগ ঘটানো যায় এবং তথ্য আদান প্রদান করা যায়।

পিসির ইনপুট ও আউটপুট ডিভাইস গুলোর সাথে তারবিহীন যোগাযোগে ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়।

জিপএস রিসিভার, বারকোড স্ক্যানার ও ট্রাফিক কন্ট্রোল ডিভাইসগুলোতে ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়।

ডেডিকেটেড টেলিহেলথ ডিভাইসগুলোতে হেলথ সেন্সর ডেটাগুলোর শর্ট রেঞ্জ ট্রান্সমিশনে ব্লুটুথ ব্যবহার করা

প্রায়ই ইনফ্রারেড ব্যবহৃত হয় এমন স্থানে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে ব্লুটুথ ব্যবহার করা হয়।

ধন্যবাদ

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url