কম্পিউটার কী? ইতিহাস ও প্রকারভেদ! What is computer

কম্পিউটারের সম্পূর্ণ পূর্ণরূপ হচ্ছে সাধারণ পরিচালন যন্ত্র বিশেষভাবে ব্যবহৃত হয় প্রযুক্তি শিক্ষা গবেষণা। ঘরের কাজ থেকে শুরু করে ব্যবসায়িক, বৈজ্ঞানিক সহ নানান ক্ষেত্রে কম্পিউটারের প্রচুর ব্যবহার হয়ে থাকে এক কথায় কম্পিউটার এমন এক যন্ত্র যা প্রায় সকল কাজ করতে সক্ষম। যা যৌক্তিক ক্রিয়াকলাপ সম্পাদনা এবং সুনির্দিষ্ট নির্দেশ অনুসরণ করে গাণিতিক গণনা সংক্রান্ত কাজ খুব দ্রুত করতে পারে এমন একটি যন্ত্র। যার নামকরণ করা হয়েছে গ্রিক শব্দ কম্পিউট (compute) থেকে। বর্তমানে কম্পিউটারকে শুধু গণনাকারী যন্ত্র বললে ভুল হবে কারণ সভ্যতার বিকাশ এবং দ্রুত অগ্রগতির ফলে বর্তমানে যুগের কম্পিউটার গুলো এমন এক যন্ত্র যা তথ্য গ্রহণ করে এবং বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে তা বিশ্লেষণ ও উপস্থাপন করতে পারে।




কম্পিউটারের ইতিহাস

বর্তমানে আমরা যেই কম্পিউটার গুলো ব্যবহার করি এই কম্পিউটারের সূচনা হয় অ্যালান টুরিং এর প্রথমে তাত্ত্বিক ও পরে ব্যবহারিক গবেষণার মাধ্যমে, বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকে পরবর্তীতে ১৯৭১ সালে মাইক্রো প্রসেসর উদ্ভাবনের পর থেকে আধুনিক কম্পিউটারের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। বাজারে প্রচলিত হয় বিভিন্ন প্রকৃতি ও আকারের কম মূল্যের অনেক রকম পিসি বা পার্সোনাল কম্পিউটার, যুক্তরাষ্ট্রের ইন্টেল কর্পোরেশন ১৯৭১ মাইক্রো প্রসেসর উদ্ভাবন করার পর থেকে বাজারে আসতে থাকে মাইক্রো প্রসেসর ভিত্তিক কম্পিউটার, তখন থেকে কম্পিউটারের আকৃতি ও কার্যক্ষমতায় এক বিরাট বিপ্লব গঠে


পরবর্তীতে ১৯৮১ সালে বাজারে আসে আই.বি.এম কোম্পানির পার্সোনাল কম্পিউটার, এরপর থেকে একের পর এক উদ্ভাবিত হতে থাকে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন মাইক্রো প্রসেসর এবং তৈরি হতে থাকে শক্তিশালী পিসি আই.বি.এম কোম্পানি প্রথম থেকেই আই.বি.এম কমপ্যাটিবল কম্পিউটার তৈরির ক্ষেত্রে কোনো বাধা-নিষেধ না রাখায় এ ধরনের কম্পিউটার গুলির মূল্য ব্যাপকহারে হ্রাস পায় এবং এর ব্যবহারও ক্রমাগত বাড়তে থাকে। একই সময় আই.বি.এম কোম্পানির পাশাপাশি অ্যাপল কম্পিউটার ইনকর্পোরেট তাদের উদ্ভাবিত অ্যাপল-ম্যাকিনটোশ কম্পিউটার বাজারে ছাড়ে।



কম্পিউটারের প্রকারভেদ

কম্পিউটারের গঠন ও প্রচলন নীতির ভিত্তিতে একে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। অ্যানালগ কম্পিউটার, ডিজিটাল কম্পিউটার এবং হাইব্রিড কম্পিউটার, তবে আকার, সামর্থ্য, দাম ও ব্যবহারের গুরুত্বের ভিত্তিতে ডিজিটাল কম্পিউটারকে চার ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলো হলো মাইক্রো কম্পিউটার, মিনি কম্পিউটার, মেইনফ্রেম কম্পিউটার এবং সুপার কম্পিউটার অর্থাৎ কম্পিউটারের মোট প্রকারভেদ হচ্ছে সাতটি যার পূর্ণাঙ্গ শ্রেণীবিভাগ নিচে দেখানো হলো



এনালগ কম্পিউটার

যে কম্পিউটার একটি রাশিকে অপর একটি রাশির সাপেক্ষে পরিমাপ করতে পারে,তাই এনালগ কম্পিউটার। এটি উষ্ণতা বা অন্যান্য পরিমাপ যা নিয়মিত পরিবর্তিত হয় তা রেকর্ড করতে পারে।মোটর গাড়ির বেগ নির্ণায়ক যন্ত্র এনালগ কম্পিউটারের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ।



ডিজিটাল কম্পিউটার

ডিজিটাল কম্পিউটার দুই ধরনের বৈদ্যুতিক ভোল্টেজ দ্বারা সকল কিছু প্রকাশ করা হয়। ভোল্টেজের উপস্থিতিকে ১ এবং অনুপস্থিতিকে ০ দ্বারা প্রকাশ করা হয় এটি যে কোন গণিতের যোগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারে এবং বিয়োগ,গুণ ও ভাগের মতো অন্যান্য অপারেশন সম্পাদন করে। আধুনিক সকল কম্পিউটার ডিজিটাল কম্পিউটার।



হাইব্রিড কম্পিউটার 

হাইব্রিড কম্পিউটার হলো এমন একটি কম্পিউটার যা এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের সর্বোত্তম বৈশিষ্ট্যগুলোর সমন্বয়ে গঠিত। এটি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় ব্যবহার করা হয়। সুতরাং বলা যায়, প্রযুক্তি ও ভিত্তিগত দিক থেকে এনালগ ও ডিজিটাল কম্পিউটারের আংশিক সমন্বয়ই হচ্ছে হাইব্রিড কম্পিউটার। সাধারণত হাইব্রিড কম্পিউটারে তথ্য সংগ্রহ করা হয় অ্যানালগ পদ্ধতিতে এবং গণনা করা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে। যেমন আবহাওয়া দপ্তরে ব্যবহৃত হাইব্রিড কম্পিউটার অ্যানালগ পদ্ধতিতে বায়ুচাপ,তাপ ইত্যাদি পরিমাপ করে ডিজিটাল পদ্ধতিতে গণনা করে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিয়ে থাকে।



মেইনফ্রেম কম্পিউটার

মেইনফ্রেম কম্পিউটার (কথ্য ভাষায় "বড় কম্পিউটার”) গুলি প্রধানত গুরুত্বপূর্ণ এবং বড় অ্যাপ্লিকেশনের জন্য ব্যবহার করে, যেমন জনসংখ্যা, শিল্প এবং ভোক্তা পরিসংখ্যান, এন্টারপ্রাইজ রিসোর্স পরিকল্পনা এবং লেনদেন প্রক্রিয়াজাতকরণ।



মিনি কম্পিউটার

যে কম্পিউটার টার্মিনাল লাগিয়ে প্রায় এক সাথে অর্ধ শতাধিক ব্যবহারকারী ব্যবহার করতে পারে তাই মিনি কম্পিউটার। এটা শিল্প-বাণিজ্য ও গবেষণাগারে ব্যবহার করা হয়ে থাকে।



মাইক্রো কম্পিউটার

মাইক্রো কম্পিউটারকে পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসি বলেও অভিহিত করা হয়। ইন্টারফেস চিপ (Mother Board) , একটি মাইক্রোপ্রসেসর, সিপিইউ, র‍্যাম, রম, হার্ডডিস্ক ইত্যাদি সহযোগে মাইক্রো কম্পিউটার গঠিত হয়। দৈনন্দিন জীবনের সর্বক্ষেত্রে এ কম্পিউটারের ব্যবহার দেখা যায়। ম্যকিনটোস আইবিএম পিসি এ ধরনের কম্পিউটার।



সুপার কম্পিউটার

অত্যন্ত শক্তিশালী ও দ্রুতগতিসম্পন্ন কম্পিউটারকে সুপার কম্পিউটার বলে। এ কম্পিউটারের গতি প্রায় প্রতি সেকেন্ডে ১ বিলিয়ন ক্যারেক্টর। কোনো দেশের আদমশুমারির মতো বিশাল তথ্য ব্যবস্থাপনা করার মতো স্মৃতিভাণ্ডার বিশিষ্ট কম্পিউটার হচ্ছে সুপার কম্পিউটার।

Next Post Previous Post
No Comment
Add Comment
comment url